সময়টা ২০০৭ সাল। আজকের দিন-১২ই ফেব্রুয়ারী। তখন আমি কক্সবাজার সাবমেরিন ক্যাবল ল্যান্ডিং স্টেশনের দুই দুটি পদে দায়িত্ব পালন করছিলাম। খবু প্রভাতেই মুঠোফোনের তরঙ্গে খবর এল বাবা ভীষণ অসুস্থ । হাসপাতালে নেয়া হয়েছে। আমাকে দ্রুত ঢাকায় আসার জন্য জানানো হলো। আমি অস্থিরতার দিকে ধাবমান। অফিসে জানালাম। ছুটি দিতে নারাজ আমার উর্ধ্বতন অফিসার। আরও উপরের এককর্তা ব্যক্তিকে ঢাকায় জানালাম। গ্রীন সিগন্যাল পেতেই তড়িঘড়ি করে ব্যস্ত হলাম ঢাকায় ফেরার...ফোনে খোঁজ নিচ্ছি মাঝে মাঝে বাবার অবস্থার। ভাল ঠেকছেনা। ঠিক বুঝতে পারছিনা। ঢাকাগামী ডাইরেক্ট বাস সব আরও আগেই চলে গেছে। জিএমজি এয়ারলাইনস এর টিকেট পেলাম। এক ঘন্টার কম সময়েই আকাশ পথে ঢাকায় নামলাম যখন তখন দুপুর ২/৩টার মত বাজে। ...এয়ারপোর্ট থেকে সরাসরি চলে গেলাম সোহরাওয়ার্দি হাসপাতাল। ...দেখেই বোঝা গেলো সেটা বাবার মৃত্যুশয্যার মত। নিশ্চুপ নিথর...কেবল আত্মাটা সচল তখনো। একবার চোখ মেলে দেখেছিলেন আমাকে। ঐ একবারই । তারপর রাত ৮টার দিকে আমার হাতের উপর ঢলে পড়লেন , মারা গেলেন আমার বাবা মাত্র ৫৯ বছর বয়সে।
ভীষন শকটা মাত্র পাঁচ মিনিটে কাটিয়ে উঠলাম , একমাত্র ছেলে , বড় বোনের ছেলের বয়স মাত্র একমাস সাতদিন। মা কে সামলাতে হবে। আমি ভীষণ শক্ত হলাম। কাগজে সই করে ডেথ সার্টিফিকেট নিতেও একটুও হাত কাঁপলোনা। বাবার লাশ সেই রাতেই সাতক্ষীরায় নেওয়ার ব্যবস্থাও করে ফেলা হলো। ...সেই মিনিট পাঁচেকের শক এখনও অন্তর অ্যাবজরভ করতে পারেনি। কেবল বাহিরের চর্মগাত্রটাই শক্ত হয়েছিল , আজও শক্ত ভীষন। বাবার জন্য কিছূই করতে পারলামনা আজও.....(সৃষ্টিকর্তা বাবাকে বেহেশত নসীব করুক।)
ভীষন শকটা মাত্র পাঁচ মিনিটে কাটিয়ে উঠলাম , একমাত্র ছেলে , বড় বোনের ছেলের বয়স মাত্র একমাস সাতদিন। মা কে সামলাতে হবে। আমি ভীষণ শক্ত হলাম। কাগজে সই করে ডেথ সার্টিফিকেট নিতেও একটুও হাত কাঁপলোনা। বাবার লাশ সেই রাতেই সাতক্ষীরায় নেওয়ার ব্যবস্থাও করে ফেলা হলো। ...সেই মিনিট পাঁচেকের শক এখনও অন্তর অ্যাবজরভ করতে পারেনি। কেবল বাহিরের চর্মগাত্রটাই শক্ত হয়েছিল , আজও শক্ত ভীষন। বাবার জন্য কিছূই করতে পারলামনা আজও.....(সৃষ্টিকর্তা বাবাকে বেহেশত নসীব করুক।)
বাবা প্রচুর বই পড়তেন। মাঝে মাঝে তাকে লিখতেও দেখেছি। অফিসের বিভিন্ন ক্রোড়পত্রে প্রবন্ধ লিখতেন। অবসরে টুকটাক কবিতার ছন্দও রচনা করতেন। বাবার কিছূ কবিতা আর ছড়া আমার সংগ্রহে আমি খুঁজে পেয়েছি। নিচে বাবার লেখা একটি কবিতা তুলে ধরলাম।
তোমার পরিচয়
শেখ আব্দুল আজিজ
তোমার পরিচয় নহে শুধু রমনী,
তোমার প্রকৃত স্বরূপ তুমি জননী।
তোমার জন্মই হলো প্রথম কন্যাতে,
তোমার অস্তিত্ব আসে সৃষ্টির বন্যাতে।
তোমার লালন পালন স্নেহের তলে,
তোমার বাল্য কৈশোর যায় পলেপলে।
তোমার যৌবন তোমাকে দেয় নারীত্ব,
তোমার ব্যস্ততা বাড়ে ঠেকাতে সতীত্ব।
তোমার বিরহ তোমাকে বানাল জায়া,
তোমার স্বরূপ পরশে ধন্য তব কায়া।
তোমার প্রেম নিবেদিত স্বামীর তরে,
তোমার জীবন সুষমায় উঠে ভরে।
তোমার সোহাগে ঝরে অবিরাম সুধা,
তোমার সুধায় নিবৃত্ত স্বামীর ক্ষুধা।
তোমার সুধায় স্বামীর ক্ষুধায় মিলে,
তোমার নয়ন মনি জন্মে তিলেতিলে।
তোমার দাম্পাত্য তোমাকে দেয় মাতৃত্ব,
তোমার স্বত্তায় আসে জননীর অস্তিত্ব।
তোমার কন্যা জায়া জননী পরিচয়,
তোমার জীবন ভরে দেয় মহিমায়।
onekkkkkkkkkkkkkkkkkkk valo laglo
উত্তরমুছুন