আহমেদ শাহ আবদালি -ইতিহাসের এই চরিত্রটির প্রতি আমার আগ্রহ অনেক। ইতিহাস বিশেষ করে মধ্য এশিয়া ও ভারতীয় উপমহাদেশের ইতিহাস আমার পাঠের প্রিয় অংশ।
আহমেদ শাহ আবদালী, বা পরবর্তিতে আহমেদ শাহ দুর্রানি ( দুর্রানি সম্রাজ্য প্রতিষ্ঠার কারণে নামের সাথে দূর্রানি যুক্ত করেন নিজে), কে বর্তমান যে আফগানাস্তিন রাষ্ট্র মূলত তার প্রতিষ্ঠাতা বলা যেতে পারে।
১৭৩৯ সালে ইরানের ভয়ংকর ও নির্দয় বাদশাহ নাদের শাহ যখন দিল্লী আক্রমন করে মোঘল সালতানাত নাস্তানাবুদ করে ফেলে, ব্যাপক গনহত্যা চালিয়ে দিল্লীর রাস্তা আর যমুনার জল রক্তে লাল করে ফেলে, লুটপাট করে মুঘল সম্রাটের ময়ূর সিংহাসন এবং কোহিনূর হিরা নিয়ে যায়, সেই অত্যাচারী দূর্বৃত্ত সেনাবাহিনীর চারহাজার সৈন্যের একটি দলের সেনাপতি বা কমান্ডার ছিলেন আহমেদ শাহ আবদালী। আহমেদ শাহর জন্ম ১৭২২ বা ১৭২৩ সালে ধরা হয়, তাহলে ১৭৩৯ সালে তার বয়স ছিলো মাত্র ১৬ বা ১৭ ; মাত্র ষোল বছর বয়সে সেনাপতি...অবাক লাগে আমার কাছে। অবশ্য ইতিহাসে রাজা বাদশাহ, সেনাপতিদের জন্যে বয়স আসলে যে কোন বিষয় ছিল না তা বহু জায়গাতেই দেখা যায়। সেই গ্রেট আলেকজান্ডার যে দুনিয়ার অনেকাংশই জয় করেছিলো সে নাকি মারাই গিয়েছিলো মাত্র ৩২ বছর বয়সে।
সে যাক। সেই সেনাপতি আহমেদ শাহ আবদালী ১৭৪৭ সালে নাদের শাহ বগিগার্ড কর্তৃক নিহত হবার পর আসন্ন বিপদ টের পেয়ে ( নাদের শাহর বিশ্বস্ত লোক হওয়ায় ) সুযোগ বুঝে কোহিনূর হিরা ও হাতের আংটি খুলে নিয়ে নিয়ে ( ইতিহাসে এমনও আছে যে কোহিনূর ১৭৫১ সালে নাদের শাহর নাতি আহমেদ শাহ আবদালীকে উপহার পাঠান) নিজের জন্মভূমি কান্দাহারে কেটে পরেন নিজাধীন চারহাজার সৈন্যবাহিনী নিয়ে ইরান থেকে ।
তার পর তার সম্রাজ্য গড়ার হবার ইতিহাস, রাজা হয়েই আটবার ভারতবর্ষ আক্রমন করেন আহমেদ শাহ আবদালী। এর মধ্যে অন্যমতম হলো পানিপথের তৃতীয় যুদ্ধ নামে পরিচিত যুদ্ধ যা আহমেদ শাহ আবদালী বাহিনীর সাথে মারাঠা বাহিনীর চীফ ইন কমান্ডার সদাসিভ ভাওয়ের ( বাজিরাও এর ভাতিজা) বাহিনীর মধ্যে সংঘটিত হয় । আহমেদ শাহ আবদালীর জয় হয় ঐ যুদ্ধে।
ছবিতে আসল আহমেদ শাহর পাশে ‘পানিপথ’ নামের চলচিত্রে আহমেদ শাহ আবদালীর চরিত্রে রূপদানকারী সঞ্জয় দত্তকে দেখা যাচ্ছে। সঞ্জয় দত্তকে দারুন মানিয়েছে। দেখার অপেক্ষায় থাকলাম ।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন