পৃষ্ঠাসমূহ

বৃহস্পতিবার, ২৮ নভেম্বর, ২০১৯

গনহত্যা

চল্লিশ হাজার বছর আগে হোমো সেপিয়্যান্স বা বর্তমান মানুষ আমরা পৃথিবী থেকে হোমো নিয়ান্ডারথালেনসিস বা নিয়ান্ডারথাল মানুষদের নিশ্চিহ্ণ করে দিয়েছিলাম, আমি চিন্তার শুরুটা ওখান থেকে করার চেষ্টা করি ; নিয়ানডারথাল হারানোর পরে নিজেরাই নিজেদের মাঝে বিভাজন করে করে নিশ্চিহ্ন করার সংস্কৃতি চালু রেখেছি।

হিংস্র বন্য প্রাণীও এভাবে জাতি গোষ্ঠী ধরে নিশ্চহ্ণ করে না তবে আমরা মানুষরা করেছি- অস্তিত্বের প্রয়োজনে করেছি, ক্ষমতার প্রয়োজনে করেছি, লোভে করেছি, পরিকল্পনা করে করেছি, জাতীয়তার নামে করেছি, ধর্মের নামে করেছি, আগ্রাসনের নামে করেছি, নৃ গোষ্ঠী বা আদিবাসী নিধনের নামে করেছি, অপ্রয়োজনেও করেছি এবং আমরা থামিনি....
বরং গালভরা সব নামকরণও করেছি আমরা, এথনিক ক্লিংজিং, মাইনরিটি নিধন, কাফের হত্যা, বিধর্মী বিতারণ, ক্রুশেড, এন্টিসেমিটিজম, ইসলামোফোবিয়া, হলোকাস্ট, এন্টি টেরোরিসম, সন্ত্রাসী নিধন, এন্টি হিন্দোইসম.... কত কত নাম...
যেদিন ইতিহাসে মাথা ঢুকিয়েছিলাম সেই শৈশবে... ২৫ শে মার্চের অপারেশন সার্চ লাইটের সেই হত্যাযজ্ঞ মনে দাগ কেটেছিলো... তারপর যত ঢুকেছি ইতিহাসের অলিগলিতে- কেবলই গন হত্যা আর গনহত্যা পৃথিবীর পূর্ব থেকে পশ্চিম আর উত্তর থেকে দক্ষিণ সর্বত্র আর মধ্যভাগেতো আরও বেশি- এক চেঙ্গিস আর আরেক তৈমুর মধ্য পৃথিবীতে যা মানুষ নিধন করেছে তা যেন অনেক অনেক নিধনের যোগফলের চেয়ে বেশি....
যেখানেই নতুন রাজত্ব কায়েম সেখানেই গনহত্যা, যেখানে নতুন উপনিবেশ সেখানেই গনহত্যা...এই যেখানে বাস করছি সেই অষ্ট্রেলিয়ায় আবাসন গড়ার দোহাই দিয়ে কত কত আদিবাসীকে যে হত্যা করা হয়েছে তার কোন ইয়াত্তা নাই....
গত ৭৫ বছরে পৃথিবীতে অন্য যেকোন শতকের থেকে সবচেয়ে কম যুদ্ধ হলেও , কম গনহত্যা হলেও যুদ্ধ ও গনহত্যা কোনটাই থামেনি....
ওদিকে সৌদি ইয়ামেনে, তুর্কী সিরিয়ার কুর্দীদের তো গনহারে মারছেই আবার চায়না উইঘোর মুসলীমদের নিশ্চিহ্ণ করার নতুন এক হলোকাস্ট চালিয়েই যাচ্ছে....
এই বলে বুদ্ধিমান শ্রেষ্ঠ জীব !
( অফিসে পৌঁছে গেছি, একজন খেটে খাওয়া এবং যুদ্ধ ও গনহত্যা বিরোধী মানুষের সাত সকালে বাসের দুলনীতে বেরিয়ে আসা মনের কথা আপাতত এ পর্যন্তই )

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন