১৯১৪ সালের আগষ্ট মাসে গ্রেট বৃটেন যখন সেন্ট্রাল পাওয়ার জার্মান, অষ্ট্রিয়া-হাঙ্গেরী, বুলগেরিয়া এবং তুরষ্কার সাথে যুদ্ধ শুরু করে দিলো তখন কমনওয়েলথের অন্তর্ভুক্ত অষ্ট্রেলিয়াও বাই ডিফল্ট যুদ্ধে বৃটিশ তথা এলাইড শক্তির অংশ হয়ে গেলো। অষ্ট্রেলিয়া তার মাত্র ১৩ বছর আগে ১৯০১ সালের জানুয়ারীতে ৬ টি স্বাধীন কলোনীকে একিভূত করে অষ্ট্রেলিয়া নামে নতুন দেশ হিসেবে আবির্ভূত হয়েছিলো।
সেই অবস্থায় অষ্ট্রেলিয়ার Australian Imperial Force (AIF) এবং the New Zealand Expeditionary Forces (NZEF) ডিসেম্বর ১৯১৪ তে Lieutenant-General Sir William Birdwood এর অধীনে একসাথে the Australian and New Zealand Army Corps (ANZAC) নামে একটি দল গঠন করে মিশরের মরু এলাকায় প্রশিক্ষন নিতে থাকে।
সেন্ট্রাল পাওয়ারে জার্মানীর সাথে ছিলো তৎকালীন সর্ববৃহৎ মুসলীম সম্রাজ্য অটোম্যান, যার অধীনে তখন আরব অঞ্চলের আজকের তুরষ্ক, ইরাক, লেবানন, সিরিয়া , আরব ইত্যাদি অঞ্চলগুলোও ছিলো। বেশ পরাক্রমশালী অটোম্যান বা তুর্কী বাহিনীকে কেন্দ্রীয় শক্রি থেকে আলাদা করার জন্য মিত্রবাহিনীর পরিকল্পনা ছিলো অটোম্যানদের রাজধানী কনস্টেন্টিনোপল বা আজকের ইস্তাম্বুল দখল করা।
মিত্র বাহিনীর যে গ্রুপটি এই পরিকল্পনা বাস্তবায়নে নিয়োজিত ছিলো তাদেরই অংশ হিসেবে যুদ্ধে যোগ দেয় ANZAC বাহিনী মিশর থেকে এসে।
১৯১৫ সালের ২৫শে এপ্রিল সকালে তুরষ্কের গালিপলির Dardanelles Peninsulaতে উপস্থিত হয় এবং দ্রুতই তারা মুখোমুখি হয় অটোম্যানদের এক অভিজ্ঞ বাহিনীর যে বাহিনীর নেতৃত্বে ছিলো এক অটোম্যান কমান্ডার যার নাম মুস্তফা কামাল ( প্রথম বিশ্ব যুদ্ধ শেষে অটোম্যান সম্রাজ্যের পতনের পর ক্ষমতা দখল করে যে পরিচিত হয় অতি পরিচিত কামাল আতাতুর্ক নামে ) ।
প্রথম দিনেই ANZAC দলের ব্যাপক প্রানহানী ঘটে।
প্রাথমিক পর্যায়ে যুদ্ধ চলে ৯ দিন। পরবর্তীতে মিত্র বাহিনীর আরও দল আক্রমনে এসে অংশ নেয় কিন্তু শেষ পর্যন্ত পরিকল্পনা সফল হয়না এবং ডিসেম্বর ১৯১৫ র মাঝামাঝি পুরো মিত্র বাহিনী গালিপলি ছেড়ে চলে যায়।
ঐ যুদ্ধে অষ্ট্রেলিয়ার আট হাজারের বেশি সৈনিক এবং নিউজিল্যান্ডের ২৭৭৯ জন সৈনিক নিহত হয়।
মূলত কোন যুদ্ধে অংশ নিয়ে এত বৃহৎ সংখ্যক নিহতের ইতিহাস এর আগে ছিলোনা অষ্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ডের।
ANZAC ডে অষ্ট্রেলিয়ান সেই বীর সেনাদের স্মরণ করার দিন ।
#ANZAC_day
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন