আজ আমার বাবার ১৬ তম মৃত্যু বার্ষিকী। অসময়েই চলে দিয়েছিলেন, তারপর ১৬ বছরও বিগত হয়ে গেছে … সময় এবং স্রোত কারো জন্যে বসে থাকে না ।
এইবার বাংলাদেশে গিয়ে বাবার যে ক’টা লেখার খাতা খুঁজে পেয়েছি সবগুলোকে অষ্ট্রেলিয়ায় মাইগ্রেট করে এনেছি । হয়তো কোনদিন ডিজিটাইজড করে ফেলতে পারবো সবগুলো লেখা । মূলতঃ তিনি ছড়া-ছন্দ কবিতা এবং প্রবন্ধ লিখতেন ।
প্রকাশের বিষয়ে তাঁর সাথে কখনও আমার আলাপ হয়নি। কিন্তু প্রকাশের চেষ্টা কখনও করেন নি জানি। আমি তবুও টানা ৯ বছর প্রকাশের পেছনে ছুটেছি অখাদ্য লেখার কালেও …তিনি কেবল প্রকাশ করতেন তার প্রিয় কর্মস্থল বাংলাদেশ ব্যাংকের ক্রোড় পত্রিকায়। কয়েকটা পত্রিকাও আমার কালেকশনে ছিলো কিন্তু বাংলাদেশে আমার সুপ্ত লাইব্রেরীর হাজার বইয়ের স্তুপ্তে ধুলোবালির সাথে সখ্যতা করে খোঁজার সময় হয় নি এবার।
ছবি আকারে পোষ্ট করা কবিতার একটি ১৯৯৪ সালে বাবা যখন বগুড়াতে পোষ্টেড ছিলেন সে সময় আর বাকী গুলো যখন চট্রগ্রাম পোষ্টেড ছিলেন সে সময়ে লেখা ।
লেখাগুলো দেখতে দেখতে সেই বগুড়া আর চিটাগাংয়ে ঘুরতে যাওয়া সময়গুলো চোখে ভেসে উঠছিলো …
🥲
চিটাগাংয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকে ওনার বিশাল অফিস রুমের জানালার সামনে দাঁড়িয়ে পুরো কর্ণফুলি নদীটা দেখা যেতো, ওপারে কাফকো ইউরিয়া সার কারখানা … জলের উপর দাঁড়িয়ে বড় বড় কার্গো জাহাজ … দূরে নদী- সাগরের মিলন রেখাটা একটু বোঝা যেতো… একটু পেছনে ঘার ঘুরালে দেখা যেতো বাবা চেয়ারে বসে কাজ করছেন …
তারপর সব স্মৃতি …
তারপর সব কেবল মাথার ভেতর
তারপর একদিন আমিও হারিয়ে যাব
মাথার ভেতরের সব হারিয়ে যাবে
ডিজিটাল মেমোরিতে কপি কত ভাবনাও হারিয়ে যাবে
যেদিন আর কেউ থাকবে না সেগুলো রিট্রিভ করার
তারপর হয়তো শুধু কারও মনে পড়বে
অধিকাংশই যাবে ভুলে
ভীষণ তাড়িত হবার কিছু নেই আমরা সবাই বাস করি
এই রিয়েলিটিরই তলে …
(ছবিতেঃ ১৯৯৫ সালে বাবার সাথে আমি আর আমার বোন Shahana Ferdous, বাটালি হিল চট্রগ্রাম )
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন